স্বামী ঘরে ঢুকেই দেখল, স্ত্রী কাঁদছে ৷ কারণ জানতে চাইলে বলল, আমাদের বাড়ির গাছটি থেকে কয়েকটা চড়ুই আমাকে দেখে ফেলেছে ৷ অথচ তখন আমার মুখ ঢাকা ছিল না ৷ এ কারণে আল্লাহ যদি পাকড়াও করেন, তখন যে আমার কোন উপায় থাকবে না গো।
স্ত্রীর সতীত্ব এবং আল্লাহভীতি দেখে খুশিতে স্বামী তার কপালে চুমু খেলো এবং কাঠুরে এনে গাছটি কেটে বিক্রি করে দিল ৷
সপ্তাহখানেক পর কর্মস্থল থেকে স্বামী একদিন একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে দেখল, তার স্ত্রী আপন প্রেমিকের কোলে লেপটে পড়ে আছে ৷
এতে স্বামী মর্মাহত হল ৷ কিন্তু টু শব্দটি না করে কিছু প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নিয়ে সে একবারে তাঁর শহর ছেড়ে চলে গেল ৷
বহু দূরের এক লোকালয়ে পৌঁছে দেখল, রাজপ্রাসাদের সামনে জনগণের ঢল নেমেছে ৷
সে একজনকে জিজ্ঞেস করল, এখানে এত মানুষ কেন?
জবাব এলো, সুলতানের রত্নভান্ডার চুরি হয়ে গেছে, তাই ৷
এর খানিক পর সে দেখল, রাস্তা দিয়ে বুযুর্গমতন একজন হেটে যাচ্ছেন ৷ তবে স্বাভাবিকভাবে নয়, আঙ্গুলের ওপর ভর দিয়ে ৷
সে তার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে জানল, তিনি এই শহরের সবচেয়ে বড় বুযুর্গ ৷
পায়ের আঘাতে কোন পিপড়া মারা যেতে পারে, এই ভয়ে তিনি সবসময় এভাবে হাটেন ৷ খুব পরহেযগার মানুষ ৷ আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতার ভয়ে তার আরো কিছু আমল দেখলে আপনি এরচেয়ে বেশি অবাক হবেন!
একথা শুনে গৃহত্যাগী লোকটি চেচিয়ে উঠে বলল, আমি চোর চিনে ফেলেছি ৷ আমাকে সুলতানের কাছে নিয়ে চলুন ৷ সে সুলতানকে বলল, কথিত ঐ বুযুর্গই আপনার রত্নভান্ডার চুরি করেছে ৷
এরপর দীর্ঘ তদন্তের পর গৃহত্যাগীর দাবিই সত্য প্রমাণিত হল!
সুলতান জানতে চাইল, তুমি কি করে বুঝলে যে,
সে-ই চোর?
গৃহত্যাগী বলল,
যখন তুচ্ছ বিষয়েও কাউকে বড় রকমের সাধুতা যাহের করতে দেখবেন, তখন বুঝবেন— তার এই সাধুতাই আসলে একটা পর্দা ৷
বড় বড় পোশাক কেবল সাধুতা প্রমাণ করে না, এটা ভন্ডের বহিঃপ্রকাশ ও বটে।