শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে সুধী সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বাধা উপেক্ষা করে আজকে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের জেদ ছিল এই সেতু নির্মাণ করাই। সেই আত্মবিশ্বাসে আজকে আলোর পথে যাত্রা করতে সক্ষম হয়েছি। যদিও মিথ্যা অভিযোগে দুই বছর দেরি হয়েছে। তবুও আমরা দমে যাইনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়। তিনি বলেন, আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াবও না। জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শিখান নাই। তিনি কখনো মাথা নত করে চলেননি।
এর আগে বক্তব্যের শুরু থেকেই তিনি পদ্মা সেতুর মিথ্যা দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছিল সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় তার কণ্ঠ বেশ ভারী ছিল। সময়ের সাথে সাথে তিনি মিথ্যা অভিযোগে তার নিজ পরিবারের যে মানসিক যন্ত্রণা হয়েছিল সেই কথাও তুলে ধরেন। কৃতজ্ঞতা জানান দেশবাসীর প্রতি যারা এ সেতুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাথে ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে, দুর্নীতির অপবাদ দিয়ে কীভাবে একটি পরিবারকে মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছে। সেই যন্ত্রণা ভোগ করেছে আমার বোন শেখ রেহানা, আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আমার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ, আমার উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই যন্ত্রণা ভোগ করেছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত, সত্যের জয় হয়েছে।
এসয় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই দেশবাসীর প্রতি যারা সেদিন আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। যারা এখানে বসবাস করতো তারা জমি ছেড়ে দিয়েছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। যদিও তাদের পুনর্বাসন করা হয়েছে।
এ সময় গ্রামীণব্যাংকের এমডি ড. ইউনূসের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, একটা ব্যাংকের এমডি ছিলেন তিনি। যদিও তার বয়স ছিল ৭০ বছর। কিন্তু আইন অনুযায়ী এমডি থাকতে পারবেন ৬০ বছর পর্যন্ত। তিনি সব আইন লঙ্ঘন করেই এমডি ছিলেন। আমাদের জন্য অনেক লজ্জার। বিষয়টি আইনের মধ্যে নিয়ে আসতে যখন আমরা মাঠে নামলাম তখন বিশ্বব্যাংক আমাদের পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুললো। এরপর আবার কানাডার আদালত যখন রায় দিলো কোন দুর্নীতি হয়নি। তখন তারা সবাই কিছুটা চুপ হলো।
শেখ হাসিনা বলেন, এর আগেই যখন সব প্রতিষ্ঠান অর্থানৈতিক সহায়তা থেকে সরে দাঁড়ালো আমি তখন পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিয়েছিলাম পদ্মা সেতু নিজের টাকায় করবো। আজকে বিশ্ব দেখছে বাংলাদেশের গৌরব।