রাজধানী থেকে মাত্র তিন ঘণ্টায় যাত্রীবাহী বাস বরিশালে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। বরিশালে সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার নাসির উদ্দিন জানান, তাদের একটি বাস রবিবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে যাত্রীদের তিন ঘণ্টার মধ্যে বরিশালে পৌঁছে দেয়।
কাউন্টার ম্যানেজার বলেন, ‘এ ছাড়া সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে আমাদের অপর একটি বাস সকাল সাড়ে ৫টায় ৪০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালে যাত্রা করে। টোলঘরে জ্যাম থাকায় দুই ঘণ্টার মতো বিলম্ব হওয়ার পরেও সেটি বরিশালে পৌঁছায় সকাল সোয়া ১০টায়। টোল ঘরে বিলম্ব না হলে সেটি আরও আগে পৌঁছতে পারতো। ’
ঢাকা-বরিশাল রুটের ইলিশ পরিবহনের চালক মোখলেসুর রহমান জানান, টোলঘরে প্রথম দিন ভিড় থাকার পরেও তিনি যাত্রীদের নিয়ে তিন ঘণ্টায় বরিশালে আসতে পেরেছেন।
এদিকে, রবিবার দুপুরে মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, মাত্র ২ ঘণ্টা ৫০ মিনিটে তিনি বরিশাল থেকে ঢাকায় পৌঁছান। জানতে চাইলে সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটিতে। ব্যবসা করেন ঢাকায়। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর তিনি বরিশাল থেকে ঢাকায় যান সাকুরা পরিবহনের একটি বাসে। বাসটি ঢাকার সায়েদাবাদ পৌঁছানো পর্যন্ত ঘড়ির দিকে নজর রাখেন তিনি। মাত্র দুই ঘণ্টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর পর তার কাছে বিষয়টি স্বপ্ন মনে হয়েছে। এ সময় ওই গাড়িতে থাকা সব যাত্রীর মধ্যে একটিই আলোচনা– এটি কীভাবে সম্ভব হয়েছে!
সিদ্দিক বলেন, ‘পদ্মা পার হওয়ার সময় সব গাড়ি থেকে যাত্রীরা সেতু দেখছিলেন। চালকরা যাত্রীদের সুবিধার্থে সেতু দিয়ে ধীরগতিতে গাড়ি চালিয়েছেন। তবে আমাদের গাড়িটা গতি না কমিয়ে স্বাভাবিকভাবে যেতে থাকে। এ সময় একাধিক যাত্রী ধীরে চালাতে বললে চালক বলছিলেন, “ভাই দেখি, কত দ্রুত ঢাকায় পৌঁছতে পারি।” এরপর কেউ কোনও কথা বলেনি। যখন ঢাকায় পৌঁছালাম, তখন তো অবাক হয়ে গেলাম।’
ওই গাড়ির চালক হায়দার মুন্সী বলেন, ‘ভোরের ট্রিপ যে সময় গেছে তখন যানবাহনের চাপ অনেক কম থাকে। কোনও জায়গায় ব্রেক করতে হয় না। এ কারণে তিন ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় যাওয়া সম্ভব। তবে পরবর্তী সময়ে ঢাকা পৌঁছাতে কমপক্ষে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগবে।’
রবিবার (২৬ জুন) ভোর ৬টা থেকে সব ধরনের যান চলাচল শুরু হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু ওপর দিয়ে। শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।